আমাদের ভবিষ্যত নারী প্রজন্ম ও কিছু কথা।

জন্ম নিয়েছি মায়ের কোলে, বড় হয়েছি এই সুন্দর শ্যামলে ভরা বাংলায়। সমাজ বলতে চিনেছি আমার মা,বাবা,ভাই-বোন আর চারপাশের পরিবেশকে। আমাদের বয়সে বড় কাউকে দেখলে আমরা দাঁড়িয়ে যেতাম, আমাদের বোনদের কোথাও দেখলে শ্রদ্ধা পোষন করতাম। আমরা চাচাদের বাজারে বা কোথাও কথা বলতে দেখলে নিজেদের সংযত করতাম যাতে উনাদের চোখে না পড়ি। এখানে সুন্দর সব মানুষের সাথে বাস করতে পারব বলে আমরা সামাজিক হয়েছিলাম, সমাজ ছাড়া মানুষ বাচতে পারেনা।
যে কথার জন্য আপনাদের এতক্ষন সমাজের সংজ্ঞা শিখাচ্ছিলা সে কথাটা একটু এবার জেনে আসা যাক। গত ২৬ ও ২৭তারিখ ছিল ঐতিহ্যবাহী পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী উৎসব। ২৭তারিখ অনুষ্টান শেষের দিকে রাত তখন ১১ টার কিছু বেশি, আমাদের গ্রামের কয়েকজন বন্ধু আসার সময় যখন বাজারে আমাদের এলাকার কিছু মেয়েকে দেখলাম তখন ভাবলাম ওরা হয়তো একলা যেতে ভয় পাবে, তাই ভাবলাম ওদের সাথে নিয়ে যায়। বয়সে আমরা তাদের ৫-৬ বছরের বড় হবো। কিছুদূর এসে দেখি ব্যানিটি ব্যাগ থেকে স্মার্ট ফোন বের করে কাকে যেন ফোন দিল (স্কুল পড়ুয়া মেয়ের হাতে স্মার্টফোন, মেয়েদের এনে দিয়েছে হাতের মুঠোই রাজ্যের প্রেম), একটু পর আমাদের একটা জুনিয়র ছেলে মেয়েটির পাশে হাজির। আমরা একটু তফাতে ছিলাম, নিজেরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। হঠাৎ দেখি ছেলে-মেয়ে দুজন এতই কাছাকাছি চলে আসল যে, আমরা আর দৃষ্টি না দিয়ে পারলাম না। আমরা দেখে ও অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। আমাদের দেখে ও তাদের এক বিন্দু পরিমান সংকোচ বোধ করেনি। যে সমাজ আমাদের সুন্দর হতে শিখিয়েছে, নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখিয়েছে, সে সমাজ,সে নারী কতটুকু শ্রদ্ধাশীল হতে পেরেছে তার নমুনা তো দেখতেই পেলেন।
তাই আমরা আর সমাজের কথা বলতে চাইনা, সুন্দর সমাজের তকমা নিয়ে ভাওতাভাজি করতে চাইনা। আমরা সমাজটাকে বদলে দিতে চাই, সত্য বলার অসীম সাহস নিয়ে অসামাজিক হতেও আমাদের দুঃখ নেই। আমরা সত্য বলা অসামাজিক লোক, আমরা মারজুক, আমরা মারজুক।


মুহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম।
ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ https://web.facebook.com/profile.php?id=100006370846531

Comments

Popular posts from this blog

আউলা | মারজুক রাসেল

মারজুক রাসেলের কিছু কবিতা।

একজন সৃষ্টিশীল মানুষ।