একজন জাফর ইকবাল ও আমাদের চেতনাবোধ।
১। অধ্যাপক জাফর ইকবাল আমেরিকার মতো দেশে ছিলেন। লোভনীয় চাকরি, ভোগ
বিলাসময় জীবন ছেড়ে চলে আসলেন দেশে। দেশে এসে যোগ দিলেন সদ্য প্রতিষ্ঠিত এক
বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটা সদ্য প্রতিষ্ঠিত ভার্সিটিতে হাজারটা সীমাবদ্ধতা থাকে।
সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এই ভার্সিটি প্রযুক্তি
চর্চায় সরাসরি বুয়েটের সাথে প্রতিযোগিতা শুরু করে দিল। সামনে থেকে নেতৃত্ব
দিলেন এই মানুষটা। প্রতি বছর তাঁর হাত দিয়ে বের হওয়া ছেলে মেয়েরা ছড়িয়ে
যেতে লাগল পৃথিবী ব্যাপী। একজন জাফর ইকবাল হয়ে গেলেন বৈশ্বিক শিক্ষক।
এই মানুষটাকে, হ্যাঁ এই মানুষটাকে আমরা সম্মান দিয়ে বলি "ষাঁড়"। একজন বলে না, একশ জন বলে না, এক হাজার জন বলে না। জাফর ইকবালকে ষাঁড় বলা মানুষের সংখ্যা কয়েক লাখ।
আচ্ছা, জাফর ইকবাল এই "ষাঁড়" ডাক শুনে কষ্ট পেতেন না? তাঁর বুকে কী এই ব্যাপারটা একটুও লাগত না? তাঁর আশেপাশের মানুষ কষ্ট পেত না?
আপনি যদি জাফর ইকবালকে ঘৃণা করেও থাকেন তবে এই শাস্তিটাই তো যথেষ্ট হওয়ার কথা। তাঁকে পেছন থেকে ছুরি মারার খুব বেশি দরকার ছিল?
২। ড্রোন শব্দটা আমাদের কাছে সব সময়ই কৌতূহলের জিনিষ। যখন থেকে ড্রোন নিয়ে কথা শুনি, গল্প শুনি, কাহিনী শুনি...ভাবতাম আহ, আমাদের যদি এই প্রযুক্তি থাকত!
এক সময় বিস্ময়কর এক খবর শুনলাম। আমাদের দেশে ড্রোন উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ড্রোন উড়বে শাবির আকাশে। কার নেতৃত্বে?
জাফর ইকবাল।
এক সময় সত্যি সত্যিই ড্রোন উড়ল। শাবির আকাশ চক্কর দিল। খবর হলো, শিরোনাম হলো। সময়ের ব্যাবধানে এই খবর চাপাও পড়ে গেল।
তবে চাপা পড়ল না এক শ্রেণীর মানুষের কাছে। তারা কারণে অকারণে ড্রোনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে। সময়ে অসময়ে জাফর ইকবালের নাম আসে না। না গর্বে না, ঘেন্নায়। তারা জাফর ইকবালের নাম দিয়ে দিল "ধ্রোন বিজ্ঞানি"। এক জন না, একশ জন না, হাজার না, লাখ লাখ মানুষ এই নামে ডাকে জাফর ইকবালকে।
আচ্ছা জাফর ইকবাল এসব দেখে কষ্ট পেতেন না? তাঁর ছেলে মেয়েরা এসব দেখত না? তাঁর মা মাত্র কদিন আগে মারা গেলেন। তিনি দেখতেন না? আপনি যে জাফর ইকবালকে ঘৃণা করেন তাঁর জন্য এই শাস্তিই তো যথেষ্ট। তাঁকে পেছন থেকে ছুরি মারা খুব বেশি দরকার ছিল?
৩। তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। কীভাবে জানি হাতে একটা বই চলে আসল। বইয়ের নাম "আমি তপু"। বইটা পড়তে বসলাম। কিছু দূর যেতে না যেতেই সমস্যা শুরু হয়ে গেল। আমার খালি কান্না পাচ্ছে। বহু কষ্টে যখন পড়া শেষ হলো তখন কাঁদতে কাঁদতে একাকার অবস্থা। এই অনুভূতি আমার একার না, আরো হাজার জনের।
এই মানুষটা এমন অসংখ্য বই লিখেছেন। গত ত্রিশ বছর ধরে বলতে গেলেই একাই শিশু কিশোর সাহিত্য এবং সায়েন্স ফিকশন সাহিত্যকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। হাজার হাজার ছেলে মেয়ে তাঁর বই পড়ছে, বই পড়ে আনন্দ পাচ্ছে। লাখ লাখ মলাটে একটা নাম ভাসছে, "মুহম্মদ জাফর ইকবাল"।
ষাঁড়, ধ্রোন বিজ্ঞানি ডাকার পাশাপাশি এই মানুষটাকে তাঁর নিজের শুদ্ধ নামে ডাকা হয় না। তাঁকে বলা হয় "জাফ্রিক বাল"। একজন না, একশ জন না, এক হাজার জন না, এই নামে তাকেডাকে লাখ লাখ মানুষ। আচ্ছা এই জিনিষ তিনি দেখেন না? তাঁর পরিবার পরিজন দেখে না? তারা কষ্ট পায় না?
শাস্তি তো দিচ্ছিলেনই। পেছন থেকে ছুরি মারার খুব বেশি দরকার ছিল?
৪। আমি জাফর ইকবাল স্যারের অন্ধ ভক্ত নই। না সাহিত্যিক হিসেবে, না মানুষ হিসেবে। তাঁর সমালোচনা করে লেখা এমন অনেক কিছুই এখনো আমার টাইমলাইনে আছে। তিনি রামপাল নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা আমি মানতে পারিনি। কিছু কিছু ইস্যুতে তাঁর মতামত বা পক্ষপাত আমার কাছে দৃষ্টিকটু মনে হতো। আমার মতের সাথে তাঁর মত মিলবে এমন কোনো কথা নেই। যার যার মতামত সব সময়ই আলাদা।
তাই বলে তাঁকে গালি দিতে হবে, দিনের পর দিন আক্রমণ করে যেতে হবে? পেছন থেকে ছুরি মারতে হবে?
যারা তাঁকে নাস্তিক বলেন, দালাল বলেন তারা একটা কথা কী একবারও ভেবে দেখেছেন এই মানুষটা কেন দেশে?
নাস্তিকতা, দালালী দেশের বাইরে থেকেও করা যায় এবং আরো নিরাপদে। যে সময়ে নাস্তিকরা স্রোতের মতো দেশের বাইরে যেতে শুরু করল তখনো তিনি দেশ ছাড়ার নাম নেননি।
কেন? কারণটা কী?
তিনি ব্যবসায়ী না। তিনি কোনো আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন না। তিনি ব্যাংক ডাকাতি করছেন না। তিনি সরকারের কোনো মন্ত্রী হতে চাইছেন না। তাহলে তাঁর স্বার্থ কী?
যে দেশে অসংখ্য ব্যাংক ডাকাত, হাজারটা ধর্ষক সে দেশে একজন জাফর ইকবালকে খুন করা খুব বেশি দরকার পড়ে গেল? আর কাউকেই খুন করা গেল না? এই দেশের একমাত্র অপরাধীর নাম জাফর ইকবাল?
৫। জাফর ইকবালকে ভিলেন ভাবার সবচেয়ে বড় কারণ তাঁর কলাম। আমি আগেই বলেছি তাঁর কলামের একনিষ্ঠ ভক্ত আমি নই। হতে পারে আপনিও নন। তাঁর কোনো লেখাই আপনার পছন্দ হয়না। হতে পারে তিনি আপনার বিপক্ষে লিখেন।
আচ্ছা আপনার পক্ষে লেখার মতো কী কেউ নেই? যদি না থাকে তবে সে দায় জাফর ইকবালের নাকি আপনার? আপনারা কেন আরেকজন জাফর ইকবাল তৈরি করতে পারছেন না? দেশের সব সমস্যা, সবার সমস্যা নিয়ে কেন কেবল জাফর ইকবালকেই বলতে হবে?
তারপরও তো এই মানুষটা বলেন। আপনার কথা মতে দালাল হলেও তিনি সব সময় মুখ বন্ধ করে থাকেন না। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তিনি বলেই যাচ্ছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে বলে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন র্যাগিং নিয়ে। এমনকি দুই বছর আগে এক চরম ইসলাম বিদ্বেষী বই কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
আপনার যদি জাফর ইকবালে সমস্যা হয় বিকল্প এক জাফর ইকবাল তৈরি করে নিন। সদা ন্যায়ের কথা বলা নতুন জাফর ইকবাল কয়দিন টিকে থাকেন সেটা না হয় দেখা যাবে।
৬। জাফর ইকবাল স্যারকে কারা কেন আক্রমণ করেছে পরিষ্কার না। তবে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ঘুরে এটা পরিষ্কার, তাঁকে হত্যা করতে চাওয়া মানুষের কোনো অভাব নেই। মনে মনে ছুরি চাপাতি নিয়ে ঘুরছে এমন মানুষ লাখ লাখ। তাঁর উপর হামলায় আনন্দ উৎসব পড়ে গেছে।
এই মানসিক বিকারগ্রস্থ মানব সম্প্রদায়ের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা কোন যুক্তিতে কোন আইনে এই মানুষটাকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন জানাবেন?
আপনাদের অধিকাংশই অতি আস্তিক, ইসলামিস্ট। আপনারা কী জানেন একজন বিপদগ্রস্থ মানুষকে দেখে আনন্দ প্রকাশ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
আপনারা কী জানেন যে কোনো বিধর্মীরও নাম বিকৃতি করলে ইসলাম কী শাস্তি দেয়?
আমি জানি আমার এই পোস্টে প্রচুর হাহা রিএক্ট আসবে। আমাকে গালি দেয়া হবে। দালাল ট্যাগ দেয়া হবে। আমি গালি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কেবল একটা কথাই বলব, জাফর ইকবালের উপর ব্যাক্তিগত বিচ্ছিন্ন হামলা না হয়ে যদি গোষ্ঠীগত হামলা হয়ে থাকে তবে বড় বেশি ভুল করে ফেলেছেন। এই হামলার কারণে জাফর ইকবাল স্যারের ভক্তের সংখ্যা হাজার গুণ বেড়ে গেল। আমি হয়তো কোনো দিন এই মানুষটাকে নিয়ে লিখতাম না, আজকে লিখে ফেললাম। তাঁকে সম্মান করার ব্যাপারটা হয়তো কোনোদিন বলা হতো না, আজকে বলে ফেললাম।
মানুষটা এমনিই মারা যেতেন কিছুদিন পর। আপনারা তাঁকে মৃত্যুর পরে আরো বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দিলেন।
ছুরি দিয়ে এমন মানুষকে খুন করা যায়, মারা যায় না। এই সহজ বোধটা কবে হবে?
#We_stand_with_Zafar_Iqbal_sir
#Get_well_soon_sir
★*************************
কুঁড়েঘর প্রকাশনীর টাইমলাইন থেকে.
মেইন পোস্ট কার্টেসী: Joynal Abedin।
এই মানুষটাকে, হ্যাঁ এই মানুষটাকে আমরা সম্মান দিয়ে বলি "ষাঁড়"। একজন বলে না, একশ জন বলে না, এক হাজার জন বলে না। জাফর ইকবালকে ষাঁড় বলা মানুষের সংখ্যা কয়েক লাখ।
আচ্ছা, জাফর ইকবাল এই "ষাঁড়" ডাক শুনে কষ্ট পেতেন না? তাঁর বুকে কী এই ব্যাপারটা একটুও লাগত না? তাঁর আশেপাশের মানুষ কষ্ট পেত না?
আপনি যদি জাফর ইকবালকে ঘৃণা করেও থাকেন তবে এই শাস্তিটাই তো যথেষ্ট হওয়ার কথা। তাঁকে পেছন থেকে ছুরি মারার খুব বেশি দরকার ছিল?
২। ড্রোন শব্দটা আমাদের কাছে সব সময়ই কৌতূহলের জিনিষ। যখন থেকে ড্রোন নিয়ে কথা শুনি, গল্প শুনি, কাহিনী শুনি...ভাবতাম আহ, আমাদের যদি এই প্রযুক্তি থাকত!
এক সময় বিস্ময়কর এক খবর শুনলাম। আমাদের দেশে ড্রোন উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ড্রোন উড়বে শাবির আকাশে। কার নেতৃত্বে?
জাফর ইকবাল।
এক সময় সত্যি সত্যিই ড্রোন উড়ল। শাবির আকাশ চক্কর দিল। খবর হলো, শিরোনাম হলো। সময়ের ব্যাবধানে এই খবর চাপাও পড়ে গেল।
তবে চাপা পড়ল না এক শ্রেণীর মানুষের কাছে। তারা কারণে অকারণে ড্রোনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে। সময়ে অসময়ে জাফর ইকবালের নাম আসে না। না গর্বে না, ঘেন্নায়। তারা জাফর ইকবালের নাম দিয়ে দিল "ধ্রোন বিজ্ঞানি"। এক জন না, একশ জন না, হাজার না, লাখ লাখ মানুষ এই নামে ডাকে জাফর ইকবালকে।
আচ্ছা জাফর ইকবাল এসব দেখে কষ্ট পেতেন না? তাঁর ছেলে মেয়েরা এসব দেখত না? তাঁর মা মাত্র কদিন আগে মারা গেলেন। তিনি দেখতেন না? আপনি যে জাফর ইকবালকে ঘৃণা করেন তাঁর জন্য এই শাস্তিই তো যথেষ্ট। তাঁকে পেছন থেকে ছুরি মারা খুব বেশি দরকার ছিল?
৩। তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। কীভাবে জানি হাতে একটা বই চলে আসল। বইয়ের নাম "আমি তপু"। বইটা পড়তে বসলাম। কিছু দূর যেতে না যেতেই সমস্যা শুরু হয়ে গেল। আমার খালি কান্না পাচ্ছে। বহু কষ্টে যখন পড়া শেষ হলো তখন কাঁদতে কাঁদতে একাকার অবস্থা। এই অনুভূতি আমার একার না, আরো হাজার জনের।
এই মানুষটা এমন অসংখ্য বই লিখেছেন। গত ত্রিশ বছর ধরে বলতে গেলেই একাই শিশু কিশোর সাহিত্য এবং সায়েন্স ফিকশন সাহিত্যকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। হাজার হাজার ছেলে মেয়ে তাঁর বই পড়ছে, বই পড়ে আনন্দ পাচ্ছে। লাখ লাখ মলাটে একটা নাম ভাসছে, "মুহম্মদ জাফর ইকবাল"।
ষাঁড়, ধ্রোন বিজ্ঞানি ডাকার পাশাপাশি এই মানুষটাকে তাঁর নিজের শুদ্ধ নামে ডাকা হয় না। তাঁকে বলা হয় "জাফ্রিক বাল"। একজন না, একশ জন না, এক হাজার জন না, এই নামে তাকেডাকে লাখ লাখ মানুষ। আচ্ছা এই জিনিষ তিনি দেখেন না? তাঁর পরিবার পরিজন দেখে না? তারা কষ্ট পায় না?
শাস্তি তো দিচ্ছিলেনই। পেছন থেকে ছুরি মারার খুব বেশি দরকার ছিল?
৪। আমি জাফর ইকবাল স্যারের অন্ধ ভক্ত নই। না সাহিত্যিক হিসেবে, না মানুষ হিসেবে। তাঁর সমালোচনা করে লেখা এমন অনেক কিছুই এখনো আমার টাইমলাইনে আছে। তিনি রামপাল নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা আমি মানতে পারিনি। কিছু কিছু ইস্যুতে তাঁর মতামত বা পক্ষপাত আমার কাছে দৃষ্টিকটু মনে হতো। আমার মতের সাথে তাঁর মত মিলবে এমন কোনো কথা নেই। যার যার মতামত সব সময়ই আলাদা।
তাই বলে তাঁকে গালি দিতে হবে, দিনের পর দিন আক্রমণ করে যেতে হবে? পেছন থেকে ছুরি মারতে হবে?
যারা তাঁকে নাস্তিক বলেন, দালাল বলেন তারা একটা কথা কী একবারও ভেবে দেখেছেন এই মানুষটা কেন দেশে?
নাস্তিকতা, দালালী দেশের বাইরে থেকেও করা যায় এবং আরো নিরাপদে। যে সময়ে নাস্তিকরা স্রোতের মতো দেশের বাইরে যেতে শুরু করল তখনো তিনি দেশ ছাড়ার নাম নেননি।
কেন? কারণটা কী?
তিনি ব্যবসায়ী না। তিনি কোনো আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন না। তিনি ব্যাংক ডাকাতি করছেন না। তিনি সরকারের কোনো মন্ত্রী হতে চাইছেন না। তাহলে তাঁর স্বার্থ কী?
যে দেশে অসংখ্য ব্যাংক ডাকাত, হাজারটা ধর্ষক সে দেশে একজন জাফর ইকবালকে খুন করা খুব বেশি দরকার পড়ে গেল? আর কাউকেই খুন করা গেল না? এই দেশের একমাত্র অপরাধীর নাম জাফর ইকবাল?
৫। জাফর ইকবালকে ভিলেন ভাবার সবচেয়ে বড় কারণ তাঁর কলাম। আমি আগেই বলেছি তাঁর কলামের একনিষ্ঠ ভক্ত আমি নই। হতে পারে আপনিও নন। তাঁর কোনো লেখাই আপনার পছন্দ হয়না। হতে পারে তিনি আপনার বিপক্ষে লিখেন।
আচ্ছা আপনার পক্ষে লেখার মতো কী কেউ নেই? যদি না থাকে তবে সে দায় জাফর ইকবালের নাকি আপনার? আপনারা কেন আরেকজন জাফর ইকবাল তৈরি করতে পারছেন না? দেশের সব সমস্যা, সবার সমস্যা নিয়ে কেন কেবল জাফর ইকবালকেই বলতে হবে?
তারপরও তো এই মানুষটা বলেন। আপনার কথা মতে দালাল হলেও তিনি সব সময় মুখ বন্ধ করে থাকেন না। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তিনি বলেই যাচ্ছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে বলে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন র্যাগিং নিয়ে। এমনকি দুই বছর আগে এক চরম ইসলাম বিদ্বেষী বই কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
আপনার যদি জাফর ইকবালে সমস্যা হয় বিকল্প এক জাফর ইকবাল তৈরি করে নিন। সদা ন্যায়ের কথা বলা নতুন জাফর ইকবাল কয়দিন টিকে থাকেন সেটা না হয় দেখা যাবে।
৬। জাফর ইকবাল স্যারকে কারা কেন আক্রমণ করেছে পরিষ্কার না। তবে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ঘুরে এটা পরিষ্কার, তাঁকে হত্যা করতে চাওয়া মানুষের কোনো অভাব নেই। মনে মনে ছুরি চাপাতি নিয়ে ঘুরছে এমন মানুষ লাখ লাখ। তাঁর উপর হামলায় আনন্দ উৎসব পড়ে গেছে।
এই মানসিক বিকারগ্রস্থ মানব সম্প্রদায়ের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা কোন যুক্তিতে কোন আইনে এই মানুষটাকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন জানাবেন?
আপনাদের অধিকাংশই অতি আস্তিক, ইসলামিস্ট। আপনারা কী জানেন একজন বিপদগ্রস্থ মানুষকে দেখে আনন্দ প্রকাশ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
আপনারা কী জানেন যে কোনো বিধর্মীরও নাম বিকৃতি করলে ইসলাম কী শাস্তি দেয়?
আমি জানি আমার এই পোস্টে প্রচুর হাহা রিএক্ট আসবে। আমাকে গালি দেয়া হবে। দালাল ট্যাগ দেয়া হবে। আমি গালি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কেবল একটা কথাই বলব, জাফর ইকবালের উপর ব্যাক্তিগত বিচ্ছিন্ন হামলা না হয়ে যদি গোষ্ঠীগত হামলা হয়ে থাকে তবে বড় বেশি ভুল করে ফেলেছেন। এই হামলার কারণে জাফর ইকবাল স্যারের ভক্তের সংখ্যা হাজার গুণ বেড়ে গেল। আমি হয়তো কোনো দিন এই মানুষটাকে নিয়ে লিখতাম না, আজকে লিখে ফেললাম। তাঁকে সম্মান করার ব্যাপারটা হয়তো কোনোদিন বলা হতো না, আজকে বলে ফেললাম।
মানুষটা এমনিই মারা যেতেন কিছুদিন পর। আপনারা তাঁকে মৃত্যুর পরে আরো বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দিলেন।
ছুরি দিয়ে এমন মানুষকে খুন করা যায়, মারা যায় না। এই সহজ বোধটা কবে হবে?
#We_stand_with_Zafar_Iqbal_sir
#Get_well_soon_sir
★*************************
কুঁড়েঘর প্রকাশনীর টাইমলাইন থেকে.
মেইন পোস্ট কার্টেসী: Joynal Abedin।

Comments
Post a Comment